চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় সড়কে গাছ ফেলে ঘণ্টাব্যাপী ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের গহেরপুর-সড়াবাড়িয়া সড়কের শালিকচড়া মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ২০টি যানবাহন আটকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম লুৎফুল কবীর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতে রাস্তায় বাবলা গাছ কেটে ব্যারিকেড দিয়ে দুই প্রান্তে ডাকাত দলের ১৫-২০ সদস্য অবস্থান নেয়। দেশি অস্ত্র রামদা, ছুরি, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে যাত্রী ও পথচারীদের পথরোধ করে ডাকাতি করে। এ সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে ভুক্তভোগীদের আটকে রাখা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াহেদ মিয়ার কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহের পৌর এলাকার মিঠুন, রনি, রাজু ও মিলন প্রাইভেটকারে ঘুরতে এসে ডাকাতদের কবলে পড়ে। তারা আন্দুলবাড়ী থেকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ দুটি স্বর্ণের চেইন, দুটি লকেট, একটি ব্রেসলেট ও পাঁচটি আংটি লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। স্বর্ণের ওজন ১০ ভরি; বাজারমূল্য সাত লাখ টাকা।

ডাকাতির কবলে পড়া খোকন বলেন, মোটরসাইকেল যোগে আমরা তিনজন বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় রামদা হাতে ১৫ থেকে ১৬ মুখোশধারী ডাকাত আমাদের গতিরোধ করে। তারা আমার মোবাইল ও ৮ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে মোবাইল দিয়ে দেয়। এ সময় আমবোঝাই বাহন আলমসাধুচালকের মোবাইল ও টাকা লুট করে নেয়। মোবাইল চাইলে তাকে রামদা দিয়ে মারধর করে। পরে আমাকে ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা লাভলু রহমান বলেন, স্থানীয় ইটভাটা মালিকের কাছ থেকে ৯ লাখ, দুই গরুর বেপারির ১৩ লাখ ৩০ হাজারসহ পথচারীদের টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়েছে। একটি প্রাইভেট কারচালক দূর থেকে বুঝতে পেরে ফিরে যাওয়ার সময় গাড়ি খাদে পড়ে যায়। পরে ডাকাতরা গিয়ে তাদের জিম্মি করে টাকা লুট করে। ঘণ্টাব্যাপী লুটকাণ্ডে ডাকাতরা প্রায় ৩০ লাখ টাকা লুটে নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
কয়েকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, রাস্তায় পথচারী, মোটরসাইকেল আরোহী, ভ্যান, ইজিবাইক, হাটের গরু ব্যাপারীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও প্রাইভেটকারের যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ডাকাতি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তারেক ও দর্শনা থানার ওসি লুৎফুল কবির। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তারেক বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ডাকাত সদস্যদের ধরতে ইতোমধ্যে পুলিশের একাধিক ইউনিট মাঠে নেমেছে। দ্রুতই তাদর গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
