দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালকের সালাউদ্দিন পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে দৈনিক কালের কণ্ঠের রংপুর অফিসের ফটো সাংবাদিক গোলজার রহমান আদরকে (আদর রহমান) প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। জিডি সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১টা ৩ মিনিটে গোলজার রহমান আদর তার কর্মস্থল কালের কণ্ঠ অফিসে অবস্থানকালীন সময়ে ০১৭৪৮৬৬৬২১১ মোবাইল নম্বর থেকে তার মোবাইল নম্বরে ফোন করে তার বিরুদ্ধে দুদকের দায়েরকৃত একটি মিথ্যা মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ সময় গোলজার ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাহিলে তিনি ঢাকা দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক এবং তার নাম সালাউদ্দিন বলে জানান। বলেন, মামলা এখন আমার হাতে। মামলাটির সমস্যা কি। কি সমাধান চাচ্ছো তুমি। তুমি সিটি মেয়রের ক্যামেরাম্যানের দায়িত্বে ছিলে। গোলজারের সন্দেহ হলে তাঁর পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। এ সময় তিনি অপর প্রান্ত থেকে মুঠোফোনে আবার বলেন, আমি দুদকের উপপরিচালক সালাউদ্দিন। প্রথমে নিজেকে তিনি পরিচালক হিসেবে পরিচয় দেন। এতে গোলজার মামলা সম্পর্কে কিছুটা তুলে ধরেন। বিস্তারিত জানতে হলে টিঅ্যান্ডটি ফোন থেকে কল করতে অনুরোধ করেন গোলজার। তখন তিনি তাকে ‘বেয়াদব’ এবং অশ্লীল ভাষায় গালমন্দসহ তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে ফোন কেটে দেন ।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৪ মার্চ তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন সজেকা রংপুরের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম রংপুর সিটি করপোরেশনে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার হোসেন আজাদের (বর্তমানে দুদকের পরিচালক) বিরুদ্ধে ৪৯টি প্যাকেজ দরপত্র ও ১৮টি প্যাকেজের কোটেশন পছন্দের ঠিকাদারকে পাইয়ে দিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জন অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে গোলজার রহমাকে স্বাক্ষী হিসেবে দুদক তলব করেন। জাহাঙ্গীর আলম তদন্ত শেষে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার হোসেন আজাদকে অভিযুক্ত করে একটি প্রতিবেদন জমা দিলে তাকে তদন্ত কর্মকর্তা থেকে বাদ দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সজেকা রংপুরের উপসহকারী পরিচালক নুর আলমকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন তৎকালীন রংপুর দুদকের উপ-পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ। দুদক রংপুরের উপসহকারী পরিচালক নুর আলম মূল অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে গোলজারকে আসামি করে একটি অভিযোগপত্র দেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
দৈনিক কালের কন্ঠ রংপুর অফিসের ফটো সাংবাদিক গোলজার রহমান আদর (আদর রহমান) বলেন, বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা আমার জানমালের ক্ষতি করতে পারে। ওই মোবাইল নম্বরধারী ব্যক্তি কে এবং কেন আমাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাজ্জাদ হোসেনের (মিডিয়া) সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
