বছরের শ্রেষ্ঠ রাত লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। হাজার বছরের চেয়ে উত্তম এই রাত। রমজানের শেষ দশকের কোনো এক রাতে এই পবিত্র রজনী। নির্দিষ্ট করে লাইলাতুল কদর চিহ্নিত করা হয়নি। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)
কিন্তু বিশুদ্ধ হাদিসে কদরের রাত চেনার বেশ কিছু আলামতের কথা এসেছে। আসুন জেনে নিই সেগুলো কয়েকটি :

প্রথম আলামত :
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরের রাতটি হবে প্রফুল্লময়। না গরম, না ঠাণ্ডা। সেদিন সূর্য উঠবে লালবর্ণে, তবে দুর্বল থাকবে।’ (ইবনু খুযাইমাহ, হাদিস : ২১৯২)

দ্বিতীয় আলামত :
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘…ঐ রাতের আলামত বা লক্ষণ হলো, রাত শেষে সকালে সূর্য উদিত হবে তা উজ্জ্বল হবে। কিন্তু সে সময় (উদয়ের সময়) তার কোন তীব্র আলোকরশ্মি থাকবে না (অর্থাৎ দিনের তুলনায় কিছুটা নিষ্প্রভ হবে)। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৭০; ইসলামিক ফাউন্ডেশন : ১৬৫৫)
তৃতীয় আলামত :
নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদর রয়েছে সপ্তম, অথবা নবম, অথবা বিংশ, যে রাতে (পৃথিবীর) নুড়ি পাথরের চেয়ে বেশি সংখ্যক ফেরেশতাগণ জমিনে নেমে আসে।’ (মাজমাউল জাওয়ায়িদ, হাদিস : ৩/১৭৮; সহিহ আল-জামি, হাদিস : ৫৪৭৩)
চতুর্থ আলামত :
উবাদাহ ইবনু সামাত (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘লাইলাতুল কদর শেষ দশ রজনীতে রয়েছে। যে এই রাত্রে নিজের (আমলের) হিসাব নিতে দাঁড়াবে, আল্লাহ তাআলা তার পূর্বের এবং পরের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন। আর এই রাত্রি আছে বেজর রাত্রিগুলোতে: নবম, সপ্তম, পঞ্চম, তৃতীয় এবং শেষ রাত।’
নবীজি আরও বলেন, ‘লাইলাতুল কদরের আলামত হচ্ছে, স্বচ্ছ রাত, যে রাতে চাঁদ উজ্জ্বল হবে, আবহাওয়ায় প্রশান্তি (সাকিনাহ) থাকবে। না ঠাণ্ডা, না গরম। সকাল পর্যন্ত (আকাশে) কোনো উল্কাপিণ্ড দেখা যাবে না। সে রাতের চাঁদের মতই সূর্য উঠবে (তীব্র) আলোকরশ্মি ছাড়া। শয়তান সেই সময় বের হয় না।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২২৭৬৫)
পঞ্চম আলামত :
এক হাদিসে নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদর উজ্জ্বল একটি রাত। না গরম, না ঠাণ্ডা। সে রাতে কোনো উল্কাপিণ্ড দেখা যাবে না।’
(মাজমাউজ জাওয়ায়িদ : ৩/১৭৯; সহিহ আল-জামিঈ, হাদিস : ৫৪৭২)
