রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ও ট্রেনে কাটা পড়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা অহরহ শোনা যায়। সর্বশেষ ২৯ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাই এলাকায় লেবেল ক্রসিংয়ে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে লালমনিরহাটের বিডিআর গেট এলাকায় রেল ক্রোসিং এ বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই মিলেছে। ট্রেন গেছে এক লাইন দিয়ে আর বেড়িয়ার পড়ছে আরেক লাইনে।
রোববার (৩১ জুলাই) বিকেলে গেটম্যান ভুল করে যে লাইনে ট্রেন আসবে সেটি না নামিয়ে পাশের লাইনের বার নামিয়ে দেন। ফলে মানুষ ও যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকা রেললাইনে চলে আসে ট্রেন। সবাই দ্রুত সরে যাওয়ায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন শহরের শতাধিক মানুষ।
রোববার বিকেলে বুড়িমারীগামী যাত্রীবাহী ৭১ নম্বর কমিউটার ট্রেন যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্টেশন মাস্টার জামিল উদ্দিনকে বুকঅফ (আপাতত সরিয়ে রাখা) ও গেটম্যান নাদের হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

পরে দায়িত্বে থাকা গেটম্যান নাদের হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে রেল বিভাগ। লালমনিরহাট স্টেশন মাস্টার জামিল উদ্দিনকে দায়িত্বের অবহেলার কারণে স্টেশন থেকে আপাতত সরিয়ে রাখা (বুকঅফ) হয়েছে।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সেখানে খোঁজ-খবর নিয়েছি। পরে স্টেশন মাস্টার জামিল উদ্দিন জন ও গেটম্যান নাদের হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত টিম করা হবে। এছাড়াও দায়িত্বের অবহেলার কারণে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, লালমনিরহাট শহরের বিডিআর গেট দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় আন্তঃনগর, মেইল ও লোকাল মিলে ৬/৭টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এ ক্রসিংয়ের কারণে দুই ভাগে বিভক্ত লালমনিরহাট শহর। ক্রসিংয়ের একপাশে সদর হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ স্টেশন, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আরেক পাশে জেলা জজ আদালত, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ সরকারি কলেজ।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট রেলেওয়ের ট্রাফিক বিভাগের সুপারিন্টেনডেন্ট জনাব খালিদুন নেছা জানান, গেটম্যানের দায়িত্বহীনতার কারণে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, সেই সাথে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এঘটনায় রেলেওয়ে বিভাগের অন্য কেউ দায়ী থাকলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
