আগামী ২৭ মার্চ থেকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন রাজশাহী বিভাগীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী। তিনি জানান, যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, মাইক্রোবাস ও সিএনজিচালিত পরিবহন ধর্মঘটের আওতায় থাকবে। হানিফ পরিবহনের এক বাস চালকের জামিন না হওয়ায় এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জানান মাহাতাব হোসেন চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত বছরের ২৬ মার্চ রাজশাহীর কাটাখালিতে হানিফ এন্টারপ্রাইজ যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হন।
এ ঘটনায় গ্রেফতার বাসচালকের এখনও জামিন দেওয়া হয়নি। অথচ তার জামিনের দাবিতে ফেডারেশনের নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের বাসচালকের জামিনের দাবিতে এর আগে গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পর দিন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিলের কাছে একই দাবিতে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা এজন্য আজ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, এর মধ্যে ওই বাসচালকের জামিন না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য দুই বিভাগে ধর্মঘট শুরু হবে। তাই আজও রাজশাহীর আদালতে বাসচালক আবদুর রহিমের জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। তাই এ দুই বিভাগের শ্রমিক নেতারা সর্বসম্মতিক্রমে রাজশাহী ও রংপুরে আগামী ২৭ মার্চ থেকে নির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী জেলা ট্রাক, ট্যাংক লরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, শ্রমিক ইউনিয়নের মাইক্রোবাস শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাপ্পী, জেলা মিশুক ও সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ইসলাম ভুলু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ রাজশাহীর কাটাখালিতে হানিফ এন্টারপ্রাইজের বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাসে আগুন ধরে যায়। এতে মাইক্রোবাসেই জীবন্ত পুড়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। পরে এ ঘটনায় মামলা হয়। এছাড়া তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বেপরোয়া গতিতে বিপজ্জনক ওভার টেকিং করে হানিফ এন্টারপ্রাইজ বাস। এ কারণেই সড়কে জীবন্ত মানুষগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যান।
