দেশের অন্যান্য জেলার মতো রংপুরেও আধা কেজির কমে বিক্রি হয় না গরুর মাংস। একারণে নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষেরা চাহিদা অনুযায়ী মাংস কিনতে পারছেন না। আবার পরিবারের সদস্যদের আবদার যারা ফেলতে পারছেন না, তারা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো গরুর মাথা, কলিজা, ফুসফুস, ভুরি কিনছেন।
রংপুর মহানগরীতে ছোটবড় ২২টি বাজার ছাড়াও পাড়া-মহল্লার মোড়ে রয়েছে গরুর মাংস বিক্রির দোকান। প্রতিদিন অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ গরু জবাই করা হয়। বর্তমানে গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা। সাধ আছে, কিন্তু সাধ্য না থাকায় গরুর মাংস কিনতে পারছেন না বেশিরভাগ নিম্ন আয়ের মানুষ।
পবিত্র মাহে রমজানে রংপুর নগরীতে সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে রংপুরের মাংস ব্যবসায়ী ও নগরীর বিভিন্ন বাজার কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
রসিক মেয়র মোস্তফা বলেন, বর্তমানে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য মাছ মাংস কেনা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। অন্যান্য দ্রব্যমুল্যের মতো গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে গরিব মানুষ তারা যেমন খাইতে পারছেন না, তেমনি তাদের শিশুদের মুখে এক টুকরা মাংসও তুলে দিতে পারছেন না। রোজার মাস শুরু হওয়ার আগে নগরীর সব মাংস ব্যবসায়ীকে ডেকে মানুষের সাধ্য অনুযায়ী মাংস কেনাবেচার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই সবার সঙ্গে কথা বলে কমপক্ষে ২৫০ গ্রাম হলেও যেন মাংস বিক্রি করা হয়। ক্রেতা বা ভোক্তা যেন মাংস কিনতে এসে ফিরে না যায়, সেই দিকটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। একজন ক্রেতা তার যতটুক প্রয়োজন, সেটাই কিনতে পারবে। যেটা পাশ্ববর্তি ভারতে রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা সেটা মানেন না বলেই অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ তার চাহিদা অনুযায়ী গরুর মাংস কিনতে পারছেন না। আমরা এবার সেই চেষ্টাটাই করবো। এটা বাস্তবায়ন করতে সিটি করপোরেশনের মনিটরিং টিম মাঠে কাজ করবে। পাশাপাশি আমরা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ প্রশাসনের সহায়তা চাই।

তবে কোনো ক্রেতা যদি ২৫০ গ্রাম মাংস কিনতে যায় আর মাংস ব্যবসায়ী যদি তা বিক্রি না করেন তাহলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই মাংস ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হবে।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আরো বলেন, আমরা ধর্মীয় ও দেশ প্রেমের নৈতিকতার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। পবিত্র মাহে রমজান আসলে অন্যান্য দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের লাভ কমে দিয়ে ন্যায্য মুল্যে পণ্য বিক্রি করে কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা মাহে রমজানে ব্যবসায় বেশি লাভবান করতে সিন্ডিকেট তৈরী করে। অথচ এই মাসে উচিত স্বল্প মুনাফায় সন্তুষ্ট থেকে ব্যবসা করা। তাই আমরা অনুরোধ করবো সিন্ডিকেট তৈরী করবেন না, অধিক মুনাফা লাভের আশায় পণ্য মজুদ করবেন না। অনুগ্রহ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের কষ্ট দিবেন না। দেশের বাজার অস্থিতিশীল করবেন না।
