প্রচলিত নিয়ম ভেঙে এবার বরের বাড়িতে বিয়ে সম্পন্ন করতে গেলেন কনে। ব্যতিক্রমী এ বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হয় বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের শৈলকুপার মনোহরপুর গ্রামে। কনের বাড়ি শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের কলোনিতে। কনে সংস্কৃতিকর্মী ইতি সেলিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিবহন ড্রাইভার আব্দুল কাদেরের কন্যা।
বর দীপ্ত টিভির কৃষি বিভাগের সাংবাদিক এমএ মালেক শান্ত লস্কর মনোহরপুর গ্রামের সামছুদ্দিন লস্করের ছেলে। বিয়ে পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান কনে ইতি সেলিনা।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে কয়েকটি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে করে ৪০-৫০ কনেযাত্রী নিয়ে একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের এম এ মালেক শান্তর বাড়িতে হাজির হন কনে। প্রথাগতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে যেভাবে বরকে বরণ করা হয়, তেমনি এই বিয়েতেও কনেকে ফুলের মালা পরিয়ে, মিষ্টি মুখ করে বরণ করে নেন বরপক্ষের আত্মীয়-স্বজনরা। এরপর বর-কনে আসনে বসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। সব অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয় এবং কনে থেকে যান বরের বাড়িতে। কনেযাত্রীর মধ্যে ছিলেন ইউএনও কানিজ ফাতেমা লিজা, এসি ল্যান্ড বনি আমিন, কনের বাবা আব্দুল কাদেরসহ অন্য আত্মীয়-স্বজনরা।
ব্যতিক্রমধর্মী এই বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের কমতি ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে বরের বাড়িতে যেমন উৎসাহী লোকজনের ভিড় ছিল তেমনি কনের বাড়িতেও অনেক মানুষ জড়ো হন। আর এই প্রথার বাইরের বিয়ের প্রস্তাবটি আসে মূলত বর শান্তর পক্ষ থেকে। তিনি চেয়েছেন এই বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।

কনের বাবা আব্দুল কাদের বলেন, বরের বাড়িতে তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেযাত্রী হিসাবে তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা এসেছেন। ব্যতিক্রমী এ বিয়েতে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত খুশি।
কনে ইতি সেলিনা জানান, তাদের বিয়েটি পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। পুরুষশাসিত সমাজ থেকে মেয়েরা যাতে বেরিয়ে আসতে পারে সেজন্য তিনি কনের বাড়িতে নয়; বরের বাড়িতে কনেযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে এসেছেন।
ব্যতিক্রমী এ বিয়ে নিয়ে বর এম এ মালেক শান্ত বলেন, এই বিয়ের মাধ্যমে সমাজে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। আমরা চেয়েছিলাম বিয়ের একটি নতুন ধারা তৈরি করতে। এতে সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য একটু হলেও কমবে।
তিনি জানান, এই বিয়ে দুই পরিবারের সম্মতিতে হয়েছে। কনে তার পূর্বপরিচিত। পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফতেমা লিজা বলেন, ব্যতিক্রমী এ বিয়ের কনে ইতি সেলিনা তার পরিবহন ড্রাইভারের কন্যা। বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেযাত্রী হিসাবে আমিও উপস্থিত ছিলাম।
