পরিবার গঠনের প্রধান শর্ত হলো বিয়ে। একটি সুন্দর পরিবার হলো সুখী সমাজের প্রথম ধাপ। বিয়ে মানে দু’জন মানুষের নতুন একটি জীবনের শুরু, একসঙ্গে পথচলা। ভালোবাসা আর মান-অভিমানে গড়ে ওঠা সুন্দর একটি সম্পর্ক। বিয়ের পরে তাই স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি থাকা জরুরি। এতে পরস্পরকে বুঝতে পারা অনেক সহজ হয়। কিন্তু সবার জীবন একভাবে চলে না। নানা বাস্তবতায় অনেক স্বামী-স্ত্রীকে দূরে থাকতে হয়। কেউ হয়তো প্রবাসী, কেউ চাকরির কারণে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়- হতে পারে এমন আরও অনেক কারণ। যেহেতু দূরে থেকেও বৈবাহিক জীবন চালিয়ে যেতে হয়, তাই সম্পর্কে দেখা দিতে পারে কিছু কিছু সমস্যা। যদি দু’জনের প্রচেষ্টা থাকে তবে দূরে থেকেও সম্পর্ক সুন্দর রাখা সম্ভব। জেনে নিন এক্ষেত্রে কী করতে পারেন-
ভালোবাসার কথা জানান

ভালোবাসার মানুষ বলেই তাকে ভালোবাসার কথা বেশি বেশি জানাতে হবে। এমনিতেই দূরে থাকলে মানুষের মনে নানা ধরনের ভুল ধারণা, সন্দেহ ইত্যাদি বাসা বাঁধতে পারে। আপনি যেন তাতে কোনোরকম ইন্ধন না যোগান! তার মনে কোনো ধরনের সন্দেহ আসতে দেবেন না। আবার সে যদি কোনোকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তবে আপনি তাকে প্রশ্রয় দেবেন না। তার জন্য আপনার কতটা মন পুড়ছে, সেকথাই জানান ভালোবাসার সুরে। এতে আপনার প্রতি সে সহজেই আস্থা রাখতে পারবে।
তার জন্য সময় রাখুন

কাছে থাকলে তাকে যতটা সময় দিতেন, ততটা সম্ভব না হলেও দিনের মধ্যে কিছুটা সময় তার জন্য রাখুন। সে দূরে আছে বলেই যে তার জন্য সময় রাখবেন না, তা যেন না হয়। যদি সে এমন দেশে থাকে যেখানে আপনার দেশের সঙ্গে সময়ের ব্যবধান অনেক, তাহলে দু’জনের জন্য সুবিধাজনক একটি সময় বেছে নিন কথা বলার জন্য। আপনার দৈনিক রুটিনের একটি অংশ যেন সে থাকে। প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ছোট ছোট ঘটনা তার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। এখন ভিডিও কলসহ কথা বলার জন্য রয়েছে অনেক সুযোগ-সুবিধা। এরপরও আপনাদের সম্পর্ক সুন্দর না রাখতে পারলে সেই দায় কিন্তু দু’জনেরই!
চিঠি লিখুন
বর্তমান সময়ে আবেগ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো সবকিছুর সহজলভ্যতা। ভিডিও কলে চাইলেই প্রিয় মুখটি দেখতে পারছেন, এ কারণে চিঠি লেখার প্রয়োজন মনে করেন না কেউ। কিন্তু আবেগ না থাকলে ভালোবাসাও ঠিক জমে না যেন। তাই তার জন্য ফিরে যেতে পারেন পুরনো দিনে। তাকে নিয়মিত চিঠি লিখতে পারেন। একটি চিঠিতে যে পরিমাণ ভালোবাসা লেগে থাকে, হাজারটা মেসেজেও তা থাকে না।
সারপ্রাইজ দিন
কাছে থাকে না বলেই যে তাকে সারপ্রাইজ দেওয়া যাবে না, তা কিন্তু নয়। ইন্টারনেটের অগ্রগতির এই সময়ে অনেককিছুই এখন হাতের মুঠোয়। আপনি যে দেশেই থাকুক না কেন, তাকে সারপ্রাইজ উপহার পাঠানোর কোনো না কোনো মাধ্যম পেয়ে যাবেন। আর সে যদি দেশের ভেতরে থাকে, তবে তো কথাই নেই! আপনি নিজেই হুট করে উপস্থিত হয়ে তাকে সারপ্রাইজ দিতে পারেন। সে কোন জিনিসটি বেশি পছন্দ করে, সেদিকে খেয়াল রেখে সারপ্রাইজ দিতে চেষ্টা করুন।
পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক
প্রিয়জন দূরে আছে কিন্তু তার পরিবার আছে আপনার কাছাকাছিই। এমন ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন তার পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার। কারণ বিয়ে মানে শুধু দু’জন মানুষের বন্ধনই নয়, দু’টি পরিবারের বন্ধনও। এই বন্ধন দৃঢ় করার চেষ্টা করুন। আপনি যখন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখবেন, তখন আপনাকে ভালোবাসা তার জন্য আরও সহজ হবে। এটি প্রযোজ্য স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ক্ষেত্রেই।
ঝগড়া পুষে রাখবেন না
ঝগড়া হলেও তা পুষে রাখবেন না। কারণ ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝি এক সময় বড় আকার ধারণ করতে পারে। সেখান থেকে সম্পর্ক নড়বড়ে হওয়ার ভয় থাকে। তাই ঝগড়া মিটিয়ে ফেলুন। দূর থেকে হলেও কাছে থাকুন। দূরে থাকলে ঝগড়াটা একটু বেশিই হয়। এর কারণ হলো, ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থাকে অনেক বেশি। ঝগড়ার শুরুটা যে-ই করুক, তা থামিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আপনার। ঝগড়ার পর অভিমান হওয়াও স্বাভাবিক। তবে খেয়াল রাখবেন, কিছুই যেন মাত্রা অতিক্রম না করে।
