প্রেমের টানে নিজ দেশ ইতালি থেকে ছুটে এসেছেন আলী সান্দ্রে চিয়ারোমিন্তে (৩৯) নামে এক ইতালিয়ান যুবক বিয়ে করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালীয়াডাঙ্গীর এক তরুণীকে। সোমবার (২৫ জুলাই) রাতে সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
তরুণী রত্না রানী দাসের (১৯) বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খোকোপাড়া গ্রামে। তার বাবা দিনমজুর মারকুস দাস। বালিয়াডাঙ্গী চাড়োল ইউপি চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার চ্যাটার্জী বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কনে রত্না রানী দাস বলেন, আমাদের প্রেম বিয়েতে রূপ নিয়েছে, এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। স্বামীর সাথে ইতালিতেই জীবনের পরবর্তী সময় পার করবেন বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন রত্না। বিবাহিত জীবন যেন সুখের হয় সেজন্য সকলের আশির্বাদ কামনা করেছেন রত্না। তবে কিভাবে প্রেমের শুরু বা প্রথম পরিচয়, তা জানতে চাইলে রত্না বিষয়টি এড়িয়ে যান।
কনের বাবা মারকুস দাস বলেন, তিনি গরীব দিনমজুর। নিজের বসতবাড়ি ছাড়া কোনো সম্পত্তি নেই। ইতালির নাগরিক বাড়িতে এসেছেন, বিষয়টি নিয়ে প্রথমে আতঙ্কিত হলেও এখন বেশ আনন্দ লাগছে। তিনি মনে করছেন যোগ্যপাত্রের কাছেই কন্যা দান করেছেন।

চাড়োল ইউপি চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার চ্যাটার্জী জানান, রত্নার কাকা ইতালির এক কারখানায় চাকরি করেন। সেই একই কারখানায় চাকরি করেন ইতালিয়ান যুবক আলি সেন্ড্রা। আলি সেন্ড্রার ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশি মেয়েকে বিয়ে করে সংসার করবেন। সেই ইচ্ছে পূরণে রত্নার কাকার সাথে পরিচয় এবং পরবর্তীতে রত্নার জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন তিনি। পরে রত্নার সাথে পরিচয় এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশে এসে রত্নাকে বিয়ে করেন আলি সেন্ড্রা। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তারা ইতালিতে ফিরে যাবেন।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম ডন বলেন, ইতালিয়ান নাগরিক বাংলাদেশে এসে ঠাকুরগাঁওয়ের তরুণীকে বিয়ে করেছেন। আমরা খবর পাওয়ামাত্রই তরুণীর বাড়িতে সার্বিক নিরাপত্তা দিয়েছি।
এদিকে, ইতালিয়ান নাগরিকের বিয়ের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়লে তাকে এক নজর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। সারাদিন শতশত মানুষের ভিড় ও বাংলাদেশের নতুন আবহাওয়ায় নিজেকে মানিয়ে দিতে কষ্ট হওয়ায় গোপনে রত্নার এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন নতুন এই দম্পত্তি।
