পাত্র-পাত্রী পছন্দ না হওয়া কিংবা যৌতুক লেনদেনে বনিবনা না হওয়ায় বিয়ে ভেঙে গেছে, এমন খবর তো অহরহই শোনা যায়। কিন্তু ফটোগ্রাফার না আনায় বিয়ে ভেঙে গেছে, এমন খবর শুনেছেন আগে? উত্তর ‘না’ হলে এবার শুনুন। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশে এমন অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়েছেন স্বয়ং কনে। পাত্রপক্ষ ফটোগ্রাফার সঙ্গে না আনায় বিয়ের আসর ছেড়ে পাশের বাড়ি চলে যান ওই তরুণী। সেখান থেকে কোনোভাবেই তাকে আর ফিরিয়ে আনা যায়নি।
ভারতের বিয়েবাড়িতে আজকাল আজব সব কাণ্ডকারখানা হয়। সম্প্রতি তারই একটা নমুনা পাওয়া গিয়েছে। আজকাল বিয়েবাড়ি মানেই খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ছবি, ভিডিয়ো এবং ফটোগ্রাফার। কারণ জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আসরে দারুণ ছবি উঠবে, তারপর সেসব সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হবে, এটাই এখন ট্রেন্ড। আর এই ফটোগ্রাফার না আসার কারণেই বিয়ে ভেস্তে দিতে চেয়েছেন স্বয়ং কনে। বিয়ের আসলে ফটোগ্রাফার নিয়ে আসতে ভুলে গিয়েছিলেন বর। সেইজন্য বিয়েই করতে রাজি ছিলেন না কনে। বিয়ের আসরে ফটোগ্রাফার যে এতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোধহয় অনেকেরই আন্দাজ ছিল না। বর সঙ্গে করে ফটোগ্রাফার নিয়ে না আসায় বিয়ে করতেই বেঁকে বসেছিলেন কনে। জানা গিয়েছে, এই কাণ্ড ঘটেছে কানপুরে।
কানপুরের দেহাত এলাকাত মঙ্গলপুর থানার অন্তর্গত একটি গ্রামের বাসিন্দা এক চাষির মেয়ের বিয়ে ছিল। জানা গিয়েছে, ভোগিনপুর বলে এক এলাকার যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল ওই চাষির মেয়ের। সমস্ত আয়োজন হয়ে গিয়েছিল। সাজানো হয়ে গিয়েছিল বিয়ের মণ্ডপ। মালাবদলের সমস্ত রকম আয়োজনও হয়ে গিয়েছিল। দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল বরযাত্রীও। কিন্তু যেই না কনে বুঝতে পেরেছিলেন যে ফটোগ্রাফার আসেনি, ওমনি বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি। বিয়ের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের সুন্দর মুহূর্তগুলো যিনি ক্যামেরায় ধরে রাখতে পারবেন তিনিই তো আসেননি। অতএব বিয়ের কাজকর্ম আর করবেন না কনে, সাফ জানিয়ে দেন তিনি। বিয়ের মণ্ডপ থেকে বেরিয়ে সটান প্রতিবেশীর বাড়িতে চলে যান কনে।
স্বভাবতই সকলে বোঝানো শুরু কনেকে। কিন্তু পাত্রীর স্পষ্ট জবাব যে বিয়ের দিনের মুহূর্তগুলো সামলে রাখার দায়িত্বই নিতে পারেন না, তাঁর সঙ্গে বিয়ে তিনি করবেন না। ভবিষ্যতে ওই যুবক তাঁর যত্ন করবেন, খেয়াল রাখবেন কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কনে। বাড়ির বড়রা সকলে মিলে বোঝানোর চেষ্টা করেন তরুণীকে। কিন্তু তিনি নাছোড়বান্দা। শেষ পর্যন্ত পুরো বিষয়টা গড়ায় থানা পর্যন্ত।

মঙ্গলপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দরি লাল জানান, বিষয়টি পারস্পরিকভাবে মীমাংসা করা হয়েছে। দুই পক্ষ একে অপরকে দেওয়া মালামাল ও নগদ অর্থ ফেরত দিয়েছে। এরপর বউ না নিয়েই বাড়ি ফিরে গেছেন বর।
বিয়ে ভাঙার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পাত্রপক্ষ ফটোগ্রাফারের ব্যবস্থা না করায় মেয়েটি রেগে যায় এবং বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।
