নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌর এলাকায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরুর বাজারের হাসিলের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে রিফাতুল ইসলাম রিফাত (২৩) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে গুলি করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত হয়েছে ৫ জন।
রোববার (১১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মদিনা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ রিফাত উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াবাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। গুলিবিদ্ধ রিফাত নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে অপর আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
জানা গেছে, সোনাইমুড়ী পৌরসভার হাইস্কুল মাঠে সরকারিভাবে একটি গরু বাজারের ইজারা দেয়া হয়। বাজারের হাসিল আদায়ের টাকা সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় করে শিডিউল ক্রয়কারীদের মধ্যে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেন স্থানীয় নেতারা। হাসিল আদায়ের ২০ ভাগ করে টাকা শুক্রবার ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল ও রাসেলকে দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে রাসেল টাকা কোনো নেতাকর্মীর মধ্যে ভাগ হবে না ঘোষণা দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ নিয়ে রাসেলের সঙ্গে জুয়েলসহ অন্য নেতাকর্মীদের বিতর্ক হয়।

এ ঘটনা নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় জুয়েলকে বাইপাস এলাকার একটি বাড়িতে ডেকে নেয় রাসেল। একপর্যায়ে ওখানে জুয়েলের দুজন লোককে মারধর করা হয়। রোববার বিকেলে রাসেল ও তার লোকজন পুনরায় শিপন নামের একজনকে মারধর করে। এরপর রোববার রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মী রিফাত দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে মদিনা ভবনের সামনে তার গতিরোধ করে রাসেল ও জয়নালসহ ১০-১৫ জন। এ সময় তাকে মারধর ও পরে রাসেলের নির্দেশে জয়নাল নামে এক যুবক রিফাতের পায়ে গুলি চালায়। রিফাতকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে হামলাকারীদের সঙ্গে তার সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত রাসেল বছর খানেক আগে জামায়াত-শিবির থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। কিছু দিন আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। গরুর হাটের হাসিলের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে রিফাতকে গুলি করে রাসেল ও তার সহযোগীরা।’
এ বিষয়ে রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘পশুর হাটের টেন্ডার পেতে ছয়জন দরপত্র দাখিল করেন। পরে তাদের মধ্যে সমন্বয় করে দেওয়ার কথা থাকলেও, টাকার ভাগ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। সিনিয়ররা বসে সমস্যাটি সমাধান করেছেন। আমিও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। তবে সংঘর্ষে সময় উপস্থিত ছিলাম না। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। একটি পক্ষ আমাকে ফাঁসাতে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আংশিক) সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম বলেন, ‘অভিযুক্ত যুবক আমার অনুসারী না। তাকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রিফাত নামে এক যুবকের পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে গুলির আঘাতের চিহ্ন কিনা তা ডাক্তারি প্রতিবেদন হাতে পেলে বলা যাবে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
