কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপির শাসনামলে তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন। ২০০৩ ও ০৪ সালে আশ্বিন-কার্তিক মাসে মঙ্গার কারণে শত শত মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। আর বর্তমান সরকারের আমলে একজন মানুষ না খেয়ে মারা গেছে এমনটা যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমি কৃষিমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেবো।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাগ-বানিয়াজুরী এলাকায় ব্রি ধান-৯২ জাতের বীজ উৎপাদনকারী কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, কৃষির উন্নয়ন করতে পারলে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হবে। কারণ কৃষির ওপর দাঁড়িয়েই সকল উন্নয়ন হবে। দেশে যদি কৃষি না থাকে তাহলে দেশ টিকে থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, কৃষক যাতে পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পায় সে বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন আর কয়েকটা দিন দেখতে, তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো কিভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো যায়। কৃষক যাতে দাম পায়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার।

ব্রি ধান ৯২ জাতের প্রসংশা করে তিনি বলেন, একজন শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা চলক সেও সরু চাল খেতে চায়। ৯২ জাতের ধান থেকে পাওয়া চাল চিকন। এযাবত কালের সবচেয়ে বেশি উৎপাদনশীন ৯২ জাতের ধান। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি শতকে কমপক্ষে ১ মণ ধান পাওয়া যায়। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে নতুন-নতুন জাত উদ্ভাবন করছে। আমরা এর সুফল পেতে শুরু করেছি। সবার মুখে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি।
উদাহরণস্বরুপ তিনি বলেন, এই যে ইউক্রেনে যুদ্ধ হচ্ছে, ইউক্রেন থেকে এখন আর গম আসছে না। তারাই গম সরবরাহ করে। রাশিয়া থেকেও গম আসছে না। ইতোমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দুর্ভিক্ষের হাতছানি। কাজেই কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ভোজ্যতেলের জন্য প্রতিবছর ২৪ হাজার কোটি টাকা আমাদের খরচ করতে হয়। ইউক্রেনের যুদ্ধ আর করোনার কারণে তেলের দাম এখন বেশি। কারণ বিদেশ থেকে এখন তেল আসছে না। যে তেল ছিল ৬শ ডলার টন, সেই তেল এখন ২ হাজার টন হয়েছে। শিপ ও জাহাজের ভাড়াও বেড়েছে।
এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, ঘিওর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
