দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পায়ের রগ কাটা অবস্থায় শহিদুল ইসলাম ইসলাম (৬০) নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও আদালতে মামলার নথিপত্র। পরিবারের দাবি, বসতভিটার জমির বিরোধকে কেন্দ্র করেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয় শহিদুল ইসলামকে।

ঘটনাটি উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দাদপুর (পুরাতন বন্দর) আফতার আলী হাসকিং মিলে ঘটেছে।
ডিআরবি টিভি ডট লাইভ কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলাম।

আফতার আলী হাসকিং মিলের পাহারাদার কানু মহন্ত বলেন, ‘মিলটি দেড়মাস থেকে বন্ধ রয়েছে। পাহারারত অবস্থায় ৪টায় মিলের পেছনে গিয়ে দেখি পরিত্যক্ত একটি কক্ষের বারান্দায় এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ। পরে বিষয়টি মিলমালিক ও স্থানীয়দের জানালে তারা পুলিশে খবর দেয়।’
আফতার আলী হাসকিং মিলের স্বত্বাধিকারী আফতার আলী বলেন, ‘জানতে পেয়ে ঘটনাস্থলে দেখি শহিদুল ইসলামের ঝুলন্ত মরদেহ। পরে বিষয়টি তাঁর পরিবার ও থানাকে জানানো হয়। মিল দেড়মাস থেকে বন্ধ। এরই সুযোগ নিয়ে কেউ রাতে হত্যা করে শহিদুলের মরদেহটি মিলের একটি পরিত্যক্ত কক্ষের বারান্দায় ঝুলিয়ে দেয়। মরদেহর পাশে একটি ছুরি ও আদালতের কাগজপত্র পড়ে রয়েছে।
নিহত শহিদুল ইসলাম দক্ষিণ বাসুদেবপুর নয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশরাফ মন্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর কৃষক ছিলেন।
স্থানীয়রা বলে, শহিদুল ইসলাম খুব সাধারণ মানুষ ছিলেন। হয়তো জমিজমা নিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’
শহিদুল ইসলামের বড় স্ত্রী কাওছার বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী একজন দিনমজুর। তিনি অন্যের জমি বা মিলে কাজ করতেন। আমাদের বসতভিটার জমি নিয়ে স্থানীয় হামিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সাথে আদালতে বিরোধ চলছে। গত রবিবার দিনাজপুর আদালতে শুনানির তারিখ ছিল। সকাল ৯টা আদালতের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শহিদুল। কিন্তু বিকাল পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় আমাদের উকিলের মাধ্যমে জানতে পারি যে শহিদুল ইসলাম অনেক আগে দিনাজপুর থেকে চলে গেছেন। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যায় না। সোমবার ভোরে জানতে পারি, আফতার আলী হাসকিং মিলে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আদালতের রায় প্রায় আমাদের পক্ষে যাওয়ার কারণেই আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তদন্তপূর্বক খুনিদের বিচার চাই।’
অভিযুক্ত হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সাথে জমি নিয়ে বিরোধ আছে ঠিকই। কিন্তু তার পরিবারের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা মিথ্যা। এর সাথে আমার কোনোপ্রকার সম্পৃক্ততা নেই।’
এ ঘটনায় ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এটি রহস্যজনক মৃত্যু। আমরা এর মধ্যে তদন্তে নেমেছি। হত্যাকারীদের শনাক্তের কাজ চলছে।’
