গাঁজা ব্যবসায়ীর ছবি তুলছিলেন কয়েকজন সাংবাদিক। আর তার সামনে রাখা উদ্ধার হওয়া গাঁজা। ক্যামেরার ক্লিক পড়ছিল আর গাঁজা ব্যবসায়ীর হাঁসি বাড়ছিল। প্রথমে মুচকি হাঁসি আর তার পর দাত বের করে হাঁসি। কোনভাবেই হাঁসি থামছিল না আসামী কামাল হোসেনের (২৭)। এ সময় তার হাঁসি দেখে উপস্থিত সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যরাও হেঁসে ফেলেন। অনেকেই আবার উপহাস করে বলেন, শ^শুর বাড়ীতে যাচ্ছে তাই একটু লজ্জা লজ্জা ভাব।
হাঁসির কারণ কি জানার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে আসামী কামাল হোসেন বলেন, আমি কোন নেশা করি না। শুধু একটু গাঁজা খাই। রোজা রমজানের মাস, সারাদিন ক্লান্তির পর কোথায় গাঁজা কিনতে যাব তাই একটু বেশি করেই গাঁজা রেখেছিলাম বাড়িতে। আর ওই সময়েই পুলিশ এসে উদ্ধার করে। তিনি বলেন, গাঁজা খাই এটা মিথ্যা বলার দরকার নাই। আমি সবসময়ই বেশি করে গাঁজা কিনে বাড়িতে রেখে দিই। পরে শেষ হলে আবার কিনি।

গত সোমবার দিবাগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কামাল হোসেনকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে ৪৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ। আসামী কামাল চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নের ইছামতি ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বরকত আলীর ছেলে।
একই রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের মহিরপুর মেম্বার পাড়া এলাকার মৃত মফির উদ্দিনের ছেলে লুৎফর রহমান (৩৩)কে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে এক কেজি গাজা উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় সাংবাদিক ভরত রায় প্রত্যয় বলেন, আমি যখন ছবি তুলছিলাম তখন সে শুধুই হাঁসছিল। এমন হাসি দেখে আমরাও হেসে ফেলি। পরে তাকে হাসির কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একসাথে অনেকগুলো গাছা কিনি পরে ধীরে ধীরে তা সেবন করি। কিন্তু হাঁসির কারনটি সে বলেনি।
সাংবাদিক মাহফুজুল ইসলাম আসাদ বলেন, প্রতিনিয়তই কোন বড় অভিযান হলে আমরা আসামীর ছবি তুলি। জীবনে আমার প্রথম অভিজ্ঞতা হলো এমন দৃশ্য দেখার। সাধারনত দেখা যায় আসামী কেদে ফেলে কিংবা মন খারাপ করে থাকে। কেউবা রাগান্বিত হয়েও থাকে। কিন্তু এভাবে হাঁসতে দেখলাম প্রথম।

চিরিরবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বজলুর রশিদ বলেন, তাকে আটক করে নিয়ে আসার পর থেকেই সে শুধুই হাঁসছিল। এমন পাগল দেখা যায় না। মনে হচ্ছিল ওর কোন পিছুটান নাই, অথচ তার বাড়িতে সবাই আছে। তিনি বলেন, দিনাজপুর পুলিশ সুপার মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটক মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
