কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশাপাশি দুই ঘরে বসবাসকারী দুই পরিবারের ছেলে ও মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মেটাতে গিয়ে বকুল মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। উপজেলার নওয়াবস এলাকায় ধরলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মীমাংসা করার চেষ্টাকালে বকুল মিয়ার পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়।
এতে গুরুতর আহত বকুল মিয়াকে জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। এখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথিমধ্যে তার মৃত্যু ঘটে। মরদেহ বর্তমানে রংপুরে আছে। সেখানে ময়নাতদন্ত করার পর শুক্রবার (১১ মার্চ) মরদেহ কুড়িগ্রামে আনা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার।

নিহত বকুল মিয়া উত্তর নওয়াবস গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তারের ছেলে। বকুল মিয়ার দুই স্ত্রী ও ৩ কন্যাসন্তান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধরলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১০ নম্বর ঘরের সুবিধাভোগী মোরশেদের মেয়ের সঙ্গে ১১ নম্বর ঘরের সুবিধাভোগী রাশেদার ছেলে রাশেদুলের (১৮) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় বিষয়টি মীমাংসার সময় নির্ধারণ করা হয়। এ অবস্থায় মোরশেদ ধরলা ব্রিজের পূর্বপাড়ের সওদাগর পাড়া (সান্ডার পাড়া) থেকে একাধিক অটোরিকশা করে কিছু লোকজন আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় নিয়ে আসে।

এদিকে দুই পরিবারের বিবাদ নিরসনে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দা ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার পুত্র বকুল মিয়া মধ্যস্থতা করে বিবাদ থামানোর চেষ্টা করেন। এরই একপর্যায়ে মোরশেদের পক্ষের লোকজনের মধ্য থেকে এক যুবক বকুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় বকুল মিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মোরশেদ ও তার স্ত্রী ফেরি করে মালামাল বিক্রি করেন। তারা আগে সওদাগর পাড়ার (সান্ডার পাড়া) বাসিন্দা ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার জানান, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহতের বড়ভাই মুকুল মিয়া বাদী হয়ে রাতেই ১০ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরও ১৫ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি আরও জানান, তদন্ত চলছে। এ ছাড়া অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় ৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
