কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষায় প্রায় ৬০ মিটার ব্লক পিসিং ধসে গেছে। এ সময় ৪টি বসতভিটা নদীতে চলে যায়। ব্লকের বাকি অংশ রক্ষা করতে তড়ি-ঘড়ি করে জিও ব্যাপ ডাম্পিং শুরু করেছে পাউবো। স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহল স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কোটি টাকা ব্যয়ের ব্লক পিসিংয়ের অদূরে বলগেট দিয়ে বালু তোলার ফলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, ২২ হাজার টাকার বিনিময়ে দুই মৌসুমের ধান বাবদ জনৈক আবু তাহের নামে এক ব্যক্তির জমি ভাড়া নিয়ে বালুর স্তুপ করে রেখেছন মিজানুর ও হক্কানী পীর। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে না। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে তারা এলাকায় বলে বেড়ায়। এ ছাড়া এদেরকে কিছু বলতে গেলে নানাভাবে হুমকির শিকার হতে হয়।
স্থানীয় ও নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাউবোর একটি সূত্র জানায়, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের ঠুটাপাইকর এলাকায় তিস্তা নদী বাম তীর রক্ষায় ২০১২ সালের দিকে ওই এলাকার বাদশার বাড়ি থেকে খইরুল্লার বাড়ি পর্যন্ত কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকশ মিটার ব্লক পিসিং করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। দুই সপ্তাহ ধরে ব্লক পিসিংয়ের অদূরে বলগেট দিয়ে বালু তুলছিলেন মিজানুর রহমান ও হক্কানী পীর নামের দুই বালু ব্যবসায়ী।
বালু তোলার ফলে ওই জায়গায় গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়ে গত বুধবার (২০ জুলাই) প্রায় ৬০ মিটার ব্লক পিসিং ধসে যায়। এ সময় আব্দুর রহমান, রাজু মিয়া, আব্দুস সালাম ও শুকলাল রবিদাসের বসতভিটা নদীতে চলে যায়। এ ছাড়া প্রায় ৯০ মিটার ব্লক পিসিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে ঠুটাপাইকর দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠুটাপাইকর বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, ঠুটাপাইকর বাজারসহ আশপাশের এলাকা চরম হুমকির মুখে রয়েছে।

বালু ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ব্লক পিসিংয়ের কাছে নয়, কমপক্ষে ৭০০ মিটার দূর থেকে বালু তোলা হয়েছে। বালু বিক্রির জন্য না, মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য বালু তোলা হয়েছিল। তবে পাউবোর জিও ব্যাগ ডাম্পিং শেষ হলে আবার বালু তোলা হবে বলেও জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ব্লক পিসিং রক্ষায় আপদকালীন প্রকল্পের মাধ্যমে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, খবর পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। সেসময় বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল বলে আমাকে জানানো হয়।
