দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ধারণার চাইতেও বেশি কোচ মেরামত হয়েছে এবার। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের এই কারখানাটিতে ঈদুল আযহায় ঘুরমুখি মানুষের যাত্রা শুরু করতে ৬৫টি কোচ মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তা অতিক্রম করে বুধবার (০৬ জুলাই) পর্যন্ত ৬৯টি কোচ প্রদান করা হয়েছে।
ঈদের ছুটির আগে আজ বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) পর্যন্ত আরও ১০টি কোচ ট্রাফিক বিভাগকে হস্তান্তর করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে সর্বশেষ বুধবার (০৬ জুলাই) মেরামত হওয়া ঝকঝকে ৪টি কোচ বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। কারখানার ক্যারেজ শপ (উপ কারখানা), পেইন্ট শপ, বগি শপ, হেবি রিপিয়ারিং শপসহ ২৯টি উপকারখানায় চলছিল ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।
কারখানা সূত্র জানায়, গোটা জুন মাস জুড়ে ঈদের গাড়ী মেরামতের জন্য কাজ করেছে কারখানাটি। এখনো কর্মযজ্ঞ চলছে।

রেলভবন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ৬৫টি কোচ মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা প্রদান করে। কিন্তু কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা ব্যাপক উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করে এ যাবত ৬৯টি কোচ ট্রাফিক বিভাগকে প্রদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫৮টি ব্রডগেজ (বড়), ও ১১টি মিটারগেজ (ছোট) কোচ। অবশ্য চলতি মাসের ৭ জুলাই পর্যন্ত আরও ১০টি কোচ ট্রাফিক বিভাগকে হস্তান্তার করা হবে বলে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য ঈদের আগেই ওই কোচগুলো সারাদেশে রেল বহরে যুক্ত হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্র জানায়, বর্তমানে কারখানাটিতে জনবল রয়েছে ৭২৮টি। ২ হাজার ৮৫৯ জনবলের বিপরীতে মাত্র ২০% জনবল নিয়ে চলছে বিশাল এই কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম। কারখানায় যাত্রীবাহী কোচ ও মালবাহী ওয়াগন মেরামত ছাড়াও তৈরি হচ্ছে ১২ হাজার ধরনের রেলওয়ে যন্ত্রাংশ।
রেলওয়ে সূত্র মতে, সৈয়দপুর কারখানায় মেরামত হওয়া অতিরিক্ত কোচ দিয়ে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে ঈদের আগে ২টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে। যার মাধ্যমে ঈদের ঘরমুখী অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হবে। প্রতিটি ট্রেনে ১১টি করে কোচ ব্যবহার করা হয়। বাকি কোচগুলো জুড়ে দেওয়া হবে পশ্চিমাঞ্চল বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনে।
বুধবার (০৬ জুলাই) সরেজমিনে কথা হয় কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক মো. সাদেকুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, সঙ্কট সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে শ্রমিক কর্মচারীদের মনোবল চাঙ্গা আছে বলে উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে।
এ প্রসংগে তিনি বলেন, গত ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের প্রতিদিন গড়ে ২.১৮ ইউনিট রেল কোচ মেরামত হত। তখন কারখানাটিতে জনবল ছিল ৯৯৩ জন। অথচ গত অর্থ বছরের জুন মানে ৭২৮ জন জনবল নিয়ে লক্ষমাত্রা অতিক্রম ৩.২৮ ইউনিট কোচ মেরামত করা হয়েছে। প্রতি ২ ইউনিটে একটি পূর্ণাঙ্গ কোচ হয়। সে অনুযায়ী প্রতিদিন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ৩ ইউনিট কোচ মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ওই সাফল্যে নৈপথ্য কারিগর হিসাবে কাজ করেনে। ৫০০ অস্থায়ী শ্রমিক (টিএলআর)।
এ ব্যাপারে কথা হয় বাংলাদশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টপ) মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী সাথে। তিনি বলেন, সীমাবদ্ধতা সত্যেও সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি সাধুবাদ জানান তিনি। তিনি বলেন, সরকার রেলওয়ের উন্নয়নে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। জনবল সঙ্কট নিরসনে উদ্যোগ রয়েছে। নতুন জনবল নিয়োগ হচ্ছে। খুব শিগগিরই সঙ্কট কেটে যাবে।
