ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। রাশিয়ার সঙ্গে যদি শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হয় তাহলে দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাবে।
রোববার সকালে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।

প্রস্তুত নয়। তার ভাষায়, ‘আমি এমন একটা দেশের প্রেসিডেন্ট থাকতে চাই না, যারা হাঁটু গেড়ে ভিক্ষা চায়।’
জেলেনস্কি আরও বলেছিলেন, তিনি বুঝেছেন যে, ন্যাটো রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করবে না। তারা এই বিতর্কিত বিষয়ের মধ্যে ঢুকতে ভয় পাচ্ছে।

জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমি তার সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। আমি গত দুই বছর ধরে প্রস্তুত ছিলাম। আমি মনে করি যে আলোচনা ছাড়া আমরা এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারি না।’
তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের এই যুদ্ধ বন্ধ করার মাত্র ১ শতাংশ সুযোগ থাকে, আমি মনে করি আমাদের এই সুযোগটি নেওয়া দরকার। আমাদের সেটা করতে হবে। আমি আপনাকে এই আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে বলতে পারি – যে কোনও ক্ষেত্রেই, আমরা প্রতিদিন মানুষকে হারাচ্ছি।’
উক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রুশ বাহিনী আমাদের নির্মূল করতে, হত্যা করতে এসেছে। আমরা আমাদের জনগণ ও সেনাবাহিনীর সেই মর্যাদা দেখাতে পারি যে, আমরা একটি শক্তিশালী আঘাত মোকাবেলা করতে সক্ষম, আমরা পাল্টা আঘাত করতে সক্ষম। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের মর্যাদা জীবন রক্ষা করতে পারছে না। তাই আমি মনে করি আমাদের আলোচনার সম্ভাবনা, পুতিনের সঙ্গে কথা বলার জন্য যেকোনো সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু যদি এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, তার মানে এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ৩০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয়।
